নৈতিক সমাজ

নীতি-আদর্শ ও গঠনতন্ত্র

সূচীপত্র

প্রারম্ভ /প্রস্তাবনা
অধ্যায় – ১/ নাম-করণ, ভিশন-মিশন, আদর্শ ও নীতিমালা
অধ্যায় – ২/ সদস্য বিষয়ক নিয়ম/নীতি
অধ্যায় – ৩/ সংগঠন, কাঠামো ও দায়িত্ব
অধ্যায় – ৪/ নেতৃত্ব গড়ে তোলা
১২
অধ্যায় – ৫/ তহবিল ব্যাবস্থাপনা নীতিমালা
১৪
অধ্যায় – ৬/ অন্যান্য / বিবিধ নিয়ম
১৫

নৈতিক সমাজ সঙ্গীত

দুর্গম গিরি, কান্তার-মরু, দুস্তর পারাবার
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি-নিশীথে, যাত্রীরা হুশিয়ার ||

দুলিতেছে তরি, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ,
ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মৎ?
কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ ||
এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার।

তিমির রাত্রি, মাতৃমন্ত্রী সান্ত্রীরা সাবধান!
যুগ-যুগান্ত সঞ্চিত ব্যথা ঘোষিয়াছে অভিযান ||
ফেনাইয়া উঠে বঞ্চিত বুকে পুঞ্জিত অভিমান,
ইহাদের পথে নিতে হবে সাথে, দিতে হবে অধিকার ||

অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানে না সন্তরন
কান্ডারী! আজ দেখিব তোমার মাতৃমুক্তি পন ||
-বিদ্রোহী জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম

“শুভরা কিছু না করলে অশুভরা জয়লাভ করবেই”
-এডমন্ড বার্ক, ১৮ শতকের আইরিশ দার্শনিক ও রাজনীতিবিদ।



“All that is needed for the triumph of the evil is for the good to do nothing about it”.

-Edmund Burke, 18th Century Irish Philosopher and Politician.

মহান স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দি পূর্ণ হতে যাচ্ছে। ৫০ বছরের বাস্তবতার নীরিখে আমরা, বাংলাদেশের সমাজ সচেতন জনগন, উপলব্ধি করছি যে

* আমাদের ব্যক্তি, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন হতে হবে সততা, নৈতিকতা, মানবতা ও বিশ্বজনীন- মূল্যবোধ সমৃদ্ধ;
* এবং সমাজ ও রাজনীতি হবে নৈতিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধ ও দৃর্বৃত্তায়ন, দূর্নীতি, অপরাধ মুক্ত;
* এবং আমাদের কর্মজীবন, রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনা হবে সাংবিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত; হবে বিচার ব্যবস্থা ;
* এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন-শিল্পায়ন হবে দূর্নীতি, দারিদ্র, বেকারত্ব ও বৈষম্য মুক্ত; পরিবেশ বান্ধব;
* এবং বিশ্বমানের হবে শিক্ষা-স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন;
* এবং প্রতিষ্ঠিত করতে হবে মৌলিক মানবাধিকার, ন্যায় বিচার ও শোষনমুক্ত -সমতা ভিত্তিক ন্যায্য সমাজ ব্যবস্থা;
* এবং দুই প্রজন্মের মধ্যেই সকল সমস্যা দূর করে জাতি ও রাষ্ট্রকে তৃতীয় থেকে প্রথম বিসশের বিশ্বের জীবন-মানে উন্নীত করতে হবে।

তাই আমরা, সমাজ সচেতন জনগন এ সব মৌলিক মূল্যবোধ ও চিন্তা-চেতনা ধারণ করে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, দেশপ্রেম ও আত্নত্যাগের শক্তিশালী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি নৈতিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধ জীবন ও জন-ঘনিষ্ঠ বিশ্বমানের রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি। এ সংগঠন নিম্নে বর্ণিত আদর্শ, নীতিমালা ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সুসংগঠিত, নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হবে।
১ । সংগঠনের নাম, কর্ম পরিধি, তাৎপর্য :
১.১। নাম : নৈতিক সমাজ।
১.২। কর্ম পরিধি : সমগ্র বাংলাদেশ।
১.৩। নামের তাৎপর্য : নৈতিক সমাজ গতানুগতিক কোন দল হবে না; বরং হবে নৈতিক, মানবিক, সামাজিক ও বিশ্বজনীন মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায়, শোষন মুক্ত, ন্যায্য ও সমতা ভিত্তিক নৈতিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ একটি রাজনৈতিক সংগঠন। নৈ স বাংলাদেশকে তৃতীয় থেকে প্রথম বিসশ-মানে উন্নীত করার জন্য নিবেদিত প্রতিষ্ঠান হবে, যার নেতা-কর্মীবৃন্দ হবেন সততা ও নৈতিকতার রোল মডেল, ভিশন ও সপ্ত-মিশন পুরনের সৈনিক।

২। নৈতিক সমাজের ভিশন, মিশন ও সঙ্গীত :
২.১। ভিশন: বাংলাদেশ হবে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের দেশ। নৈতিক রাজনীতি, দেশপ্রেম, মেধা, বিচক্ষনতা ও সততা হবে এ পরিবর্তনের মূলমন্ত্র। রাষ্ট্র হবে দুর্বৃত্তায়ন, দূর্নীতি, দারিদ্র, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত। গণ-ক্ষমতায়ন, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরন, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার হবে নিশ্চিত। দুই প্রজন্মের মধ্যেই তৃতীয় থেকে প্রথম বিশ্বের জীবন মানে উন্নীত হবে প্রিয় বাংলাদেশ।
২.২। মিশন ‘‘সুস্থ ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতির মাধ্যমে নৈতিক জাগরন, রাজনৈতিক সংস্কার, সাংবিধানিক সুশাসন, ন্যায়বিচার, দূর্নীতি, দারিদ্র, বেকারত্ব, বৈষম্য থেকে মুক্তি , উন্নত শিক্ষা-স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, পরিবেশ বান্ধব উন্নয়ন-শিল্পায়ন।
২.৩। সঙ্গীত: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘‘ কান্ডারী হুশিয়ার ’’ হবে নৈতিক সমাজের গণ-সঙ্গীত।

৩। প্রতিষ্ঠানের পতাকা, প্রতীক ও নিবন্ধন :
৩.১। পতাকার তাৎপর্য : লাল-সবুজ রং এবং লাল সূর্য্য হলো জাতীয় প্রতীক এবং মাঝখানে সাদা রং হবে নৈতিকতা, সততা ও পবিত্রতার প্রতীক। ৫ টি তারকা ৫ টি মূল লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের প্রতীক
Capture
৩.২। পতাকার মাপ/ডিজাইন/ব্যবহারের নিয়ম: পরিশিষ্ট ক (পৃষ্ঠা ২৪)।
৩.৩। নিবন্ধন : যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন কমিশনের সকল নিয়ম–শর্ত পূরণ করে নিবন্ধনের আবেদন জমা দিতে হবে।
৪। রাজনৈতিক নীতি–আদর্শ, মূল্যবোধ এবং লক্ষ্য–উদ্দেশ্য : আমাদের রাজনৈতিক সংষ্কৃতির অধঃপতন হতে হতে রাজনীতি মারাত্নক ভাবে দূষিত, কলুষিত ও বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। এই অপসংষ্কৃতি দূর করতে নীচে বর্ণিত আদর্শ, নীতি–মালা, মূল্যবোধ ও লক্ষ্য–উদ্দেশ্য গুলোর বাস্তবায়ন একান্ত প্রয়োজন। এগুলো নৈতিক সমাজের মৌলিক বৈশিষ্ট্য এবং কোর ভ্যালু
৪.১। রাজনৈতিক নীতি–আদর্শ : নৈতিক সমাজ জাতীয় সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক সকল নীতি–আদর্শ ধারণ করে অর্থাৎ জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং শোষণ মুক্ত সমাজ। একই সাথে নৈতিক মূল্যবোধ এবং জলবায়ু ও পরিবেশ সুরক্ষা – এ দুটি বিষয়ও মৌলিক প্রয়োজন হিসাবে বিবেচনা করা হবে। এ দুটোর সংক্ষিপ্ত বর্ননা নিম্নরূপ :
ক। নৈতিক মূল্যবোধ : মানব–সভ্যতায় এবং সুস্থ জীবন দর্শনে নৈতিক, মানবিক, সামাজিক ও বিশ্বজনীন মূল্যবোধ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি দেশের রাজনীতি সততা–নৈতিকতা–মানবতা বিবর্জিত হলে সে দেশে সকল মূল্যবোধের ধ্বস নামে, মানুষ অমানুষ হয়ে যায়, রাজনীতি আরও দূষিত–বিষাক্ত হতে থাকে। বিষাক্ত রাজনৈতিক অপসংষ্কৃতি এবং জটিল দূর্নীতি–চক্র তখন শুধু আইন ও বিচার দিয়ে দমন করা সম্ভব হয় না। দমন সম্ভব হবে রাজনীতির মধ্যে “নৈতিক মূল্যবোধ” জাগ্রত করার মাধ্যমে; সমাজে ও রাজনীতিতে শক্তিশালী নৈতিক জাগরণ সৃষ্টি করে এবং “সততাই শ্রেষ্ঠ নীতি– তা প্রতিষ্ঠিত করে। নৈতিক সমাজের রাজনীতিতে বিশেষ ভাবে সে চর্চা করা হবে; নিয়ম–নীতি ভিত্তিক সুশৃঙ্খল দল গড়ে তোলা হবে।
খ। জলবায়ু ও পরিবেশ সুরক্ষা : বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণের একটি বড় ভুক্তভোগী বাংলাদেশ। বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে উপকূলীয় অঞ্চল ডুবে যেতে পারে। নদী ও সমুদ্র ব্যবস্থাপনা, নির্মল বায়ু ও পানি, শিল্পায়ন, তেল-গ্যাস-খনিজ ও বিদ্যুৎসহ সকল উন্নয়ন / উদ্ভাবন কর্মকান্ড অবশ্যই পরিবেশ বান্ধব ভাবে করতে হবে, নবায়নযোগ্য জ্বালানীর প্রসার ঘটাতে হবে। শিল্পায়ন ও উন্নয়নের নামে “পৃথিবীকে” ধ্বংস করা যায় না। নৈতিক সমাজ তাই এ বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিবে।
৪.২। রাজনৈতিক নীতিমালা ও মূল্যবোধ : রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ও রাষ্ট্রপরিচালনায় যে সব নীতিমালা ও মূল্যবোধ সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে তা হল:
ক। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং হস্তক্ষেপ মুক্ত ন্যায় বিচার।
খ। “আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশী তাকে দেব” – নীতির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও বাস্তবায়ন।
গ। শিশু বয়স থেকেই গড়ে তুলতে হবে দেশপ্রেম, স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বের চেতনা, গণতন্ত্রের চেতনা, মানবাধিকার, সংবিধান ও আইন মেনে চলার স্বতঃস্ফূর্ত© মানসিকতা।
ঘ। রাজনীতি পেশা নয়, ব্যবসা নয়, অর্থ-সম্পদ অর্জনের স্থান নয়, রাজনীতি হবে নিঃস্বার্থ জনসেবা।
ঙ। রাজনীতিতে বিরোধীতা মানে শত্রুতা নয়, থাকতে হবে আন্তদলীয় সহনশীলতা, পরমত সহিষ্ণুতা ও শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থান।
চ। ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি হবে আদর্শ, সততা ও নৈতিকতার সুউচ্চ মডেল, বিশ্বমানের শিক্ষা ও মেধা বিকাশের অংগন, কোন নোংড়া রাজনীতির গুটি নয়।
ছ। রাজনীতি হবে সুস্থ ও পরিচ্ছন্ন। ভ্রাতৃঘাতী দ্বন্দ, কোন্দল, আধিপত্য, অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
জ। মাদক ব্যবসা, মানব পাচার, অর্থ-পাচার, দূর্নীতি অথবা কোন অপরাধ জগতের সাথে কোন রাজনীতিবিদ/জনপ্রতিনিধি কোন ভাবেই যুক্ত হতে পারেন না। সাজাপ্রাপ্তদের রাজনীতিতে আশ্রয়, প্রশ্রয়, পুর্নবাসন এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী ও খুনের অপরাধে সাজা প্রাপ্তদের মার্জনা অনৈতিক ও অনভিপ্রেত।
ঝ। রাজনীতিতে কোন রকমের দুর্বৃত্তায়ন, সহিসংসতা, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, আইন লংঘন কারিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া যেতে পারে না।
ঞ। প্রশাসনে, বিচার ব্যবস্থায়, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে অবৈধ হস্তক্ষেপ অবাঞ্ছিত ও নৈতিক অপরাধ।
ট। প্রশাসন দলীয়করন করা অপরাধ। শীর্ষ থেকে নিম্নতম নির্বাচিত / নিয়োগ প্রাপ্ত / নিয়োজিত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ব্যক্তি দায়িত্বে সংবিধান ও আইন-শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।
ঠ। রাষ্ট্রের মালিক জনগন, সকল ক্ষমতার উৎস জনগন। জনগনের উন্নয়নই দেশ ও জাতির উন্নয়ন – এ নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।
ড। ত্যাগ করতে হবে ঔপনিবেশিক মনোভাব ও শাসন পদ্ধতি। প্রশাসন ও পুলিশ ব্যাবস্থায় আমূল সংষ্কার করতে হবে। সিভিল ও পুলিশ সার্ভিস রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত রাখতে হবে।
ঢ। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভিত্তি হবে জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষন এবং আঞ্চলিক ও বিশ্ব-শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা প্রদান।
ণ। জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সামরিক ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য। বঙ্গোপসাগরেও দেশের সার্বভৌমত্ব ও সমুদ্র-সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

৪.৩। লক্ষ্য–উদ্দেশ্য নৈতিক সমাজের ৭ টি মূল লক্ষ্য-উদ্দেশ্য (মিশন) গুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:
শক্তিশালী নৈতিক জাগরণঃ পারিবারিক, মানবিক, সামাজিক, ব্যবসায়িক, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক – জীবনের সকল ক্ষেত্রে এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ব্যাপক উদ্ধুদ্ধকরণ কর্মকান্ড চালু করতে হবে। সকল বিশ্বজনীন নৈতিক মূল্যবোধ এবং দেশপ্রেম অবশ্যই শক্তিশালী ও প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সত্য প্রকাশের পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। ন্যায়-অন্যায়, উচিত-অনুচিত, সত্য-মিথ্যা, নিয়ম-অনিয়ম, শুভ-অশুভ, ভাল-মন্দ, সুস্থ মানসিকতা-মনস্তত্ব ইত্যাদির পার্থক্য ও নৈতিক গুনাবলী সমূহ দৈনন্দিন জীবন চর্চার অংশে পরিনত করতে হবে। এ জন্য গণচেতনার ব্যবস্থা করতে হবে। নৈতিক সমাজের নেতা-কর্মীবৃন্দকে সততা ও নৈতিকতার রোল মডেল হতে হবে; জীবন চর্চায় প্রমান করতে হবে যে, -‘‘সততাই শ্রেষ্ঠ নীতি’’; সততার ভিত্তিতেই গড়ে তুলতে হবে নৈতিক বিপ্লব, নৈতিক জাগরণ।
আমূল রাজনৈতিক / প্রশাসনিক সংস্কার : প্রচলিত রাজনীতিতে / প্রশাসনে / পুলিশে / সেবাখাতে – বিভিন্ন বিভাগে ও পেশায় যত রকম দূর্বলতা-দোষ-ত্রুটি-অনিয়ম-অন্যায়-ব্যাত্যয় আছে – সব চিহ্নিত করে আমূল সংষ্কার করতে হবে। জাতীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন ও গণ-বান্ধব করার লক্ষ্যে সকল অনিয়ম, দূর্নীতি ও দলীয় প্রভাব মুক্ত রাখতে হবে। সকল নেতৃত্বে মেধা, বিচক্ষনতা ও সততা নিশ্চিত করতে হবে। রাজনীতিতে, প্রশাসনে বা অন্য কোথাও কেউই কোন বিশেষ সুবিধাভোগী বা আইনের উর্ধ্বে থাকতে পারবে না। প্রশাসন ও পুলিশকে অবশ্যই হতে হবে জন-সেবায় শতভাগ নিবেদিত। সাংবিধানিক সুশাসন : সংবিধান, গনতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার ও নাগরিক দায়িত্ব সম্পর্কে সকলের মধ্যে চেতনা শানিত করতে হবে। সংবিধান আবশ্যই মানতে হবে সকল সরকারকে, সকল সরকারী প্রতিষ্ঠানকে। বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড, গুম/অপহরণ, মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে হবে। ঝুলে থাকা প্রায় ২৫-৩০ লক্ষ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি প্রয়োজন। আইনের পূর্ন শাসন নিশ্চিত করতে না পারলে রাজনীতি ও রাষ্ট্রের ব্যবস্থায় জনগনের আস্থা ফিরবে না, কোন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না এবং গণতন্ত্র নিরংকুশ হবে না।
ন্যায় বিচার : বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করা হবে না – লেখা আছে, বাস্তবে নেই। এ দ্বি-চারিতা,স্ববিরোধীটা বন্ধ করা হবে। সুনিশ্চিত করা হবে যে – আইনের চোখে সবাই সমান। প্রশ্নাতিত থাকবে বিচারকদের স্বাধীনতা, নৈতিক শক্তিতে তারা হবেন রোল মডেল।
দূর্নীতি, দারিদ্র, বেকারত্ব, বৈষম্য থেকে মুক্তি : দূর্নীতি কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে আমাদের মানবিক-সামাজিক নৈতিক-মানবিক মূল্যবোধ এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়ন। দূর্নীতি নির্মূল শুরু করতে হবে রাজনীতি, প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থার শীর্ষ থেকে, পেশাজীবী ও ব্যবসাজীবীদের শীর্ষ থেকে। শীর্ষ স্তর দূর্নীতি মুক্ত হলে নিম্নস্তরে দূর্নীতি সহজেই দূর হবে। অর্থনীতি, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, ব্যাংক ব্যবস্থাপনা, আয়কর / অন্যান্য কর ব্যবস্থাপনা, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা, বাজেট, সরকারি ক্রয় / বিক্রয় ও রাষ্ট্রীয় শিল্প-বানিজ্য খাত এমনভাবে চালাতে হবে যাতে ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী-কৃষক-শ্রমিক স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে এবং খাতগুলো লাভজনক হয়। সকল উন্নয়নের লক্ষ্য হবে সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার মান উন্নত করা, দ্রুত দারিদ্র-বেকারত্ব-বৈষম্য দূর করা এবং তৃতীয় থেকে প্রথম বিশ্বের মান ও মর্য্যাদা অর্জন করা।
শিক্ষা-স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান–প্রযুক্তি ও ব্যবহারিক উদ্ভাবন : শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড” অশিক্ষা, কুশিক্ষা, শিক্ষা ব্যবস্থায় দূর্নীতি ও অব্যবস্থা এ মেরুদন্ড খুব দুর্বল করে ফেলেছে। ফলে গবেষণা, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন পিছিয়ে আছে। শিক্ষার মান, শুধু বিশ্ব নয়, এশিয়ার মানেও পিছিয়ে আছে। অবশ্যই শিক্ষা ব্যবস্থাকে দূর্নীতি মুক্ত করতে হবে, মেধা গবেষণা ও উদ্ভাবনের চর্চা বাড়াতে হবে এবং প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্র্যন্ত শিক্ষকতাকে মর্যাদা সম্পন্ন পেশায় পরিণত করতে হবে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিশ্ব-মানে নিয়ে যেতে হবে, সকলের জন্য নিশ্চিত করতে হবে।
পরিবেশ বান্ধব উন্নয়ন–শিল্পায়ন : জলবায়ু পরিবর্তনকে অস্তিত্বের প্রশ্ন হিসাবে বিবেচনা করতে হবে। সকল উন্নয়ন-শিল্পায়ন নীতি, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে হবে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বৈজ্ঞানিক তথ্য অনুসরন করে। বনাঞ্চল, জলাশয়, হাওড়/বাওড়, নদী-সমুদ্র দূষণ মুক্ত ও সুরক্ষিত করতে হবে। আধুনিক হবে সকল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।
৫। সদস্যপদ: নৈতিক সমাজের মতবাদ, চেতনা, আদর্শ, নীতিমালা এবং গঠনতন্ত্রের প্রতি আন্তরিক ও অনুগত, নূন্যতম ১৮ বৎসর বয়সী সুস্থ মনের সকল বাংলাদেশী সদস্যপদের শর্তাবলী পূরণ সাপেক্ষে সদস্য হতে পারবেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র/ছাত্রী, যুব নারী-পুরুষ ও পেশাজীবিদের নিয়ে সহযোগী সংগঠন গড়ে তোলা হবে। হাইস্কুল/দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র/ছাত্রীবৃন্দ শিক্ষানবীশ/ পর্যবেক্ষক সদস্য হতে পারবেন। তবে ছাত্র রাজনীতির চরিত্র অবশ্যই দুর্বৃত্তায়ন মুক্ত করতে হবে, নৈতিকতা-মানবতা সমৃদ্ধ করতে হবে। শিক্ষক রাজনীতির চরিত্র মর্য্যাদাশীল করতে হবে।
৬। সদস্য পদের শর্তাবলী
৬.১। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সংবিধানের প্রতি ্পূর্ন আনুগত্য ।
৬.২। সমাজে সৎ-নীতিবান, অসাম্প্রদায়িক ও উদার নৈতিক ভাবমূর্তী থাকতে হবে।
৬.৩। কোন ফৌজদারী মামলার অভিযুক্ত/দন্ড প্রাপ্ত আসামী নহেন।
৬.৪। প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ, সুস্থ, গণতান্ত্রিক ও নৈতিক সংস্কৃতি বিকাশে এবং নৈতিক লক্ষ্য-উদ্দ্যেশ্য অর্জনে অবদান রাখতে হবে।
৬.৫। সংগঠনে আধিপত্য বিস্তার, দন্দ-কোন্দল ও সন্ত্রাস করা যাবে না।

৭। সদস্যবৃন্দের অঙ্গীকার : গুরুত্বের সাথে এ সব অঙ্গীকার পূরণ করতে দৃশ্যমান ভাবে নিবেদিত প্রাণ হতে হবে :
৭.১। ব্যক্তিগত অঙ্গীকার : ‘‘ আমি সৎ, নীতিবান ও আত্ন-মর্যাদাশীল জীবন যাপন করব। সব সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকব ও অন্যায় কাজে কখনো কাউকে কোন প্রকার আশ্রয়-প্রশ্রয় বা সহায়তা দেব না।’’
৭.২। প্রাতিষ্ঠানিক অঙ্গীকার : “আমি নৈতিক সমাজের নীতি-আদর্শ, রাজনৈতিক ও নৈতিক মূল্যবোধ এবং লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের প্রতি সর্বান্ত করনে অনুগত থাকব; ভিশন-মিশন ও সকল লক্ষ্য অর্জনের জন্য সব সময় নিবেদিত থাকব।”
৮। সদস্যবৃন্দের আচরণ বিধি : শীর্ষ থেকে শিকড় পর্যন্ত সকলের জন্য প্রযোজ্য :
৮.১। সদা-সর্বদা সততা, নীতি-নৈতিকতা, মানবিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক মূল্যবোধ সমূহ ধারণ/লালন-পালন করতে হবে।
৮.২। আর্থ-সামাজিক বা ফৌজদারী অপরাধ মূলক কোন অপঃতৎপরতার সাথে সম্পৃক্ত হওয়া/থাকা যাবে না।
৮.৩। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে, আইনকে নিজস্ব গতি পথে চলতে দিতে হবে। তদন্তে বাবিচারে অন্যায়ের পক্ষে প্রভাব খাটানো যাবে না, অভিযুক্তকে গোপনে বা প্রকাশ্যে রক্ষা করা যাবে না।কোন তথ্য বা সত্য গোপন করা যাবে না।
৮.৪। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক বা প্রাতিষ্ঠানের ভাবমূর্তী ক্ষুন্নকরে এমন কোন আচার-আচরণ করা যাবেনা।
৮.৫। সংখ্যা গরিষ্ঠ মতের সিদ্ধান্ত দ্বিধাহীন ভাবে মানতে হবে। ব্যক্তি স্বার্থ ত্যাগের মানসিকতা গড়তে হবে।
৮.৬। নৈতিক সমাজকে আভ্যন্তরীণ গনতন্ত্রের একটি সাংগঠনিক ‘‘রোল মডেল’’ হিসাবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট থাকতে হবে।
৮.৭। প্রতিষ্ঠানে আধিপত্ব বিস্তার, দ্বন্দ-কোন্দল, হিংসা-বিদ্বেষ বা সংঘাত সৃষ্টি করা যাবে না। কোন গ্রুপিং করা যাবে না।
৮.৮। সকল সদস্যদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ মূলক সম্পর্ক রাখতে হবে।
৮.৯। নৈতিক সমাজের সকল রীতি-নীতি, আচার-আচরণ, আদর্শ ও নিয়ম শৃংখলা মনে প্রানে মেনে চলতে হবে।
৮.১০। আচরণ বিধি বা প্রতিষ্ঠানের শৃংখলা ভংগজনিত ঘটনার তদন্ত ও বিচার মেনে নিতে হবে।
৮.১১। সময়ে সময়ে জারী করা নৈতিক সমাজের নিয়ম-শৃংখলা ও বিধি-বিধান পালন করতে হবে।
৮.১২। নৈতিক সমাজের ভিশন, মিশন, অংগীকার এবং লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সমুহ বুঝতে হবে ও অন্যদের বুঝাতে হবে।
৮.১৩। উগ্র-ধর্মান্ধতা, জঙ্গিবাদ ও কোন সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত হওয়া যাবে না। এ সব জানা মাত্র কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
৮.১৪। কখনো মিথ্যা বা ধোকার আশ্রয় নেয়া যাবে না। সচেতন থাকতে হবে যেন প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের উপর থেকে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস ক্ষতিগ্রস্থ না হয় ।
৮.১৫। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং আইন মেনে চলার স্বাভাবিক প্রবণতা থাকতে হবে।
৮.১৬। ভবিষ্যতে নির্দেশিত অন্যান্য আচরণ-বিধি ও নির্দেশনা মানতে হবে।
৯। সংগঠনের কাঠামো / অর্গানোগ্রাম :
৯.১। জাতীয় সম্মেলন (সর্বোচ্চ স্তর)
• সভাপতি ০১জন (পদাধিকার বলে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভাপতি)।
• কেন্দ্রীয় নির্বাহি পরিষদ (কে নি প) ৮০জন
• উপদেষ্টা মন্ডলী ৩০জন (সংখ্যা কম বেশি করা যাবে)।
• জেলা/ মহানগর/ প্রতিনিধি ৭৫০ জন (প্রতি সাংগঠনিক জেলা থেকে ১০জন X ৭৫জেলা/মহানগর = ৭৫০ জন
• নৈতিক মহিলা সমাজ (সহযোগী সংগঠন প্রতিনিধি) ২৫০জন
• কৃষক সমাজ ,, ১০০ জন নোট :
• যুব সমাজ ,, ২০০ জন ১। বাৎসরিক নীতি -নির্ধারনী এ সম্মেলন করতে হবে।
• ছাত্র সমাজ ,, ২০০ জন ২। এজেন্ডা, বিভিন্ন নির্দেশনা ও তারিখ ৩ মাস আগে
• পেশাজীবি সমাজ ,, ১০০ জন সবাইকে জানাতে হবে।
• শ্রমিক সমাজ ,, ১০০ জন ৩। মহিলা অংশগ্রহন হতে হবে এক-তৃতীয়াংশ।
• সাংস্কৃতিক সমাজ ,, ১০০ জন ৪। প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা যাবে।
• প্রবাসী সমাজ ,, ৫০ জন ৫। সময়ে সময়ে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সম্মেলন সম্পর্কে
• ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠি সমাজ ,, ৫০ জন দিক নির্দেশনা জানাবে।
৬। প্রয়োজনে কে নি প প্রতিনিধি সংখ্যা বাড়াতে পারেন।
মোট = ২,০১১জন

৯.২। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ (কে নি প) :
* সভাপতি – ১ জন * দপ্তর সম্পাদক – ১ জন
* সহ সভাপতি – ৭ জন * সম্পাদক, প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা – ১ জন
* সাধারণ সম্পাদক – ১ জন * রাজনৈতিক প্রশিক্ষন কেন্দ্র – ১ জন
* যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক – ৫ জন * আন্তর্জাতিক সম্পর্ক – ১ জন
* সাংগঠনিক সম্পাদক – ১০জন * জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা – ১ জন
* সম্পাদক, আইন-শৃঙ্খলা – ১ জন
* নারী ও শিশু বিষয় – ১ জন
* গবেষনা ও পরিকল্পনা – ১ জন
* দূর্যোগ, ত্রাণ ও পূনর্বাসন – ১ জন
* প্রচার, প্রকাশনা ও আইটি – ১ জন
* আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন – ১ জন
* কৃষি ও শিল্প – ১ জন
* শিক্ষা ও উদ্ভাবন – ১ জন
* স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা – ১ জন
* সামাজিক, ধর্ম, সাংস্কৃতিক, যুব ও ক্রীড়া – ১ জন
* জলবায়ু ও পরিবেশ – ১ জন
* অর্থ, তহবিল ও বাজেট – ১ জন
* নির্বাহী সদস্য – ৩৯ জন
মোট : ৮১ জন

৯.৩। কে নি প বিষয়-ভিত্তিক উপ-কমিটি গঠন করতে পারবেন।
৯.৪। জেলা/মহানগর/থানা/উপজেলা/ পৌরসভা/ইউনিয়ন/ওয়ার্ড কমিটি :
* সভাপতি – ১ জন
* সহ সভাপতি – ৫ জন
* সাধারণ সম্পাদক – ১ জন
* যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক – ৩ জন
* সাংগঠনিক সম্পাদক – ৩ জন
* দপ্তর সম্পাদক – ১ জন
* সম্পাদক, প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা – ১ জন
* রাজনৈতিক প্রশিক্ষন কেন্দ্র – ১ জন
* আইন ও শৃঙ্খলা – ১ জন
* নারী ও শিশু বিষয়ক – ১ জন
* পরিবহন ও নিরাপত্তা – ১ জন
* আন্তর্জাতিক সম্পর্ক – ১ জন
* গবেষনা ও পরিকল্পনা – ১ জন
* দূর্যোগ, ত্রাণ ও পূনর্বাসন – ১ জন
* প্রচার ও প্রকাশনা ও আইটি – ১ জন
* আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন – ১ জন
* কৃষি ও শিল্প – ১ জন
* শিক্ষা ও উদ্ভাবন – ১ জন
* স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা – ১ জন
* সামাজিক, ধর্ম, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া – ১ জন
* জলবায়ু ও পরিবেশ – ১ জন
* অর্থ, তহবিল ও বাজেট – ১ জন
* নির্বাহী সদস্য – ৩১জন
মোট : ৬১ জন

৯.৫। সকল ক্ষেত্রে মহিলা অংশগ্রহন ও সদস্য এক-তৃতীয়াংশ করতে হবে। এ জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।
৯.৬। উপদেষ্ঠা মন্ডলী হবেন কেন্দ্রে ৩০ জন, জেলায়/ মহানগরে ২০ জন, উপজেলা / থানায়/ইউনিয়নে ১৫ জন। স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ এ সংখ্যা বাড়াতে পারবেন।

১০। সংগঠন গড়ে তোলার নীতিমালাঃ গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। যেমন:
১০.১। আভ্যন্তরীন গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি হবে সংগঠন গড়ে তোলার মৌলিক নীতি। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ ( কে নি প ) ৬ মাসের জন্য আহ্বায়ক কমিটি নিয়োগ করতে পারবেন। আহ্বায়ক কমিটির জনবল কম হতে পারে।
১০.২। প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোন ব্যক্তিতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র, গোষ্ঠিতন্ত্র বা ”গ্রুপিং” / ”কাল্ট” সৃষ্টির প্রচেষ্টা করা যাবে না।
১০.৩। সকল স্তরে যৌথ / সামষ্টিক নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহন প্রক্রিয়া প্রচলন করতে হবে।
১০.৪। যে কোন স্তরে সদস্য পদ ছাড়া অন্য কোন বা একই পদে কোন ব্যক্তি ৪ বছরের ২ টার্মের বেশি থাকতে পারবে না। দীর্ঘায়িত কোন জাতীয় দুর্যোগে / সংকটে বিশেষ প্রয়োজন বোধে সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কে নি প দিতে পারবেন।
১০.৫। একই ব্যক্তি একই সময়ে একই স্তরে একটি মাত্র পদে থাকতে পারবেন। এক মাত্র ব্যতিক্রম হবে কে নি প সভাপতি, যিনি পদাধিকার বলে সভাপতি পরিষদের ও জাতীয় সম্মেলনেরও সভাপতি থাকবেন। কমিটি গঠিত হবে। তাঁরা নৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদি বিষয়ে নীতি-নির্ধারণ ও দিক-নির্দেশনা মূলক পরামর্শ দিবেন।

১০.৬। যৌথ ও সামষ্টিক নেতৃত্ব বিকাশের লক্ষে সভাপতি সহ সকল সহ-সভাপতিবৃন্দ সমমর্য্যাদার হবেন, তবে সভাপতি অন্যান্যদের তুলনায় “ফার্স্ট এমংগ ইকুয়াল্স” হিসাবে গন্য হবেন। ক্ষমতাসীন হলে “কেবিনেট কালচার”ও সে ভাবেই হবে।
১০.৭। ক্ষমতাসীন হলে প্রধানমন্ত্রী সহ সকল মন্ত্রী পরিষদবর্গ ও অন্যান্য পদাধিকারী দলীয় পদ ছেড়ে শুধু মাত্র সদস্য হিসাবে থাকবেন।
১০.৮। প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক শৃংখলা, ঐক্য, সংহতি ও উজ্জল ভাবমূর্তি সৃষ্টি ও সুরক্ষার জন্য শীর্ষ থেকে নিম্ন পর্যন্ত সকলকেই গঠনতন্ত্রের বিধি-বিধান অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মতকে সানন্দে গ্রহণ করতে হবে।
১০.৯। সকল পর্যায়ে অর্থ-ব্যবস্থাপনায় এবং আয় / ব্যায়ের হিসাব নিকাশে “সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদীহিতার” সংস্কৃতি সুষ্পষ্ট ও দৃশ্যমান ভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
১০.১০। সংগঠনে/বিভিন্ন কমিটিতে সকল সিদ্ধান্ত গনতান্ত্রিক নিয়মে সংখ্যা গরিষ্ঠ মত অনুযায়ী নিতে হবে। সংখ্যা লঘিষ্ঠদের অবশ্যই মত প্রকাশের পূর্ন স্বাধীনতা থাকবে। মুক্ত আলোচনা শেষে সংখ্যা গরিষ্ঠ মতের সিদ্ধান্ত স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সকলকে মেনে নিতে হবে। আভ্যান্তরিন মত পার্থক্য বাইরে / মিডিয়াতে প্রত্যক্ষ / পরোক্ষ কোন ভাবেই প্রকাশ করা যাবে না।
১০.১১। শুধু মাত্র দায়িত্ব প্রাপ্ত মুখ-পাত্র মিডিয়াতে সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুমোদিত তথ্য ও মতামত ব্যাক্ত করতে পারবেন।
১০.১২। নৈতিক সমাজের কোন অঙ্গ সংগঠন থাকবে না। নৈতিক ছাত্র সমাজ, নৈতিক যুব সমাজ, নৈতিক মহিলা সমাজ, নৈতিক কৃষক সমাজ, নৈতিক শ্রমিক সমাজ, নৈতিক পেশাজীবী সমাজ ইত্যাদি নামে বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন করা হবে। কে নি প -এর তত্বাবধানে তাদের নিজস্ব গঠনতন্ত্র করতে হবে।
১০.১৩। নারী জাগরণ, নারী ও শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সকল স্তরে এক-তৃতীয়াংশ নারী সদস্য রাখতে হবে।
১০.১৪। কে নি প সংগঠন গড়ে তোলা সংক্রান্ত বিভিন্ন নির্দেশনা সময়ে সময়ে জারী করতে পারবেন।
১১। সাংগঠনিক স্তর বিন্যাস ও কর্মপ্রণালী :
১১.১। জাতীয় সম্মেলন নৈতিক সমাজের সর্বোচ্চ ফোরাম হবে এবং কে নি প সভাপতি পদাধিকার বলে এ সম্মেলনে নেতৃত্ব দিবেন। দ্বিতীয় সর্ব্বোচ্চ ফোরাম হবে সভাপতি পরিষদ। তৃতীয় ফোরাম হবে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ (কে নি প)। তার পর হবে পর্যায়ক্রমে জেলা/মহানগর, উপজেলা/থানা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড কমিটি সমুহ।
• ১১.২। জাতীয় সম্মেলন ন্যুনতম তিন/চতুর্থাংশ ভোটে গঠনতন্ত্রের সংশোধন/সংযোজন/পরিবর্তন করতে ৯ পারবেন। তবে গঠনতন্ত্রের কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) ও অন্যাান্য সাধারণ সংশোধন কে নি প করতে পারবেন। গঠনতন্ত্র সংশোধন/ সংযোজন/পরিবর্তনের জন্য কে নি প নুন্যতম ৩ মাস আগে প্রস্তাব আহ্বান করবেন।
১১.৩। সভাপতি পরিষদ প্রয়োজন অনুসারে কে নি প-এর অনুরোধক্রমে সংগঠনের খসড়া অর্গানোগ্রাম/কাঠামো সংশোধন/পরিবর্তন/পরিবর্ধন করতে পারবেন। জাতীয় সম্মেলনের অধিবেশনে আদর্শ, নীতিমালা ও গঠনতন্ত্র চুড়ান্ত অনুমোদন করা হবে।
১১.৪। সভাপতি, কে নি প সমগ্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি কোন কোন সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পরিষদের বিভিন্ন সদস্যবৃন্দকে অর্পন করতে পারেন।
১১.৫। কেন্দ্রীয় ও অন্যান্য নির্বাহী পরিষদ নিয়মিত মাসিক সভা করবেন। এ সকল সভায় সাধারণ সম্পাদক সকল সাচিবিক এবং সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবেন এবং যুগ্ম সাধারন সম্পাদকবৃন্দ সহায়তা প্রদান করবেন। যে কোন মহামারী / প্যানডেমিক অবস্থায় সুযোগ থাকলে ভিডিও সভার ব্যবস্থা করা যাবে।
১১.৬। যে সব বিষয়ে এ গঠনতন্ত্রে নিদের্শনা নেই বা জাতীয় সম্মেলনের নির্দেশনা নেই, সে সব বিষয়ে সভাপতি পরিষদ ব্যাখা ও নির্দেশনা দিতে পারবেন এবং কে নি প সভায় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সর্বক্ষেত্রেই সংখ্যা গরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে সভাপতির রুলিং চুড়ান্ত বলে গৃহীত হবে। “টাই” হলে সভাপতি “কাস্টিং” ভোট দিতে পারবেন।
১১.৭। আঞ্চলিক সমন্বয়ের জন্য মহানগর এবং বিভাগীয় সমন্বয় পরিষদ – বি স প করা হবে। মহানগর ও জেলার সভাপতি, সহসভাপতি ও সাধারন, যুগ্ম সাধারণ ও সাংগঠনিক সম্পাদকবৃন্দ এ পরিষদের সদস্য হবেন। কে নি প সমন্বয়ের নেতৃত্ব নির্ধারণ করবেন।
১১.৮। প্রবাসে বাংলাদেশী নাগরিক সমাজ নিয়ে কমিটি করা যাবে।
১১.৯। ৬৪ প্রশাসনিক জেলা এবং ১১ টি মহানগর সহ সারা দেশে মোট ৭৫ টি সাংগঠনিক জেলা হবে। প্রয়োজনে সাংগঠনিক জেলা সংখ্যা কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ বাড়াতে / কমাতে পারবেন।
১১.১০। প্রাথমিক পর্যায়ে বা কমিটি ভাংগা হলে যে কোন স্তরে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হবে। আহব্বায়ক কে নি প -এর নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় সকল মহানগরে/জেলায় আহব্বায়ক কমিটি করা যাবে।
জেলা/মহানগর/উপজেলায়/থানা/ইউনিয়নে এবং ওয়ার্ড আহব্বায়ক কমিটি উচ্চতর কমিটির নেতৃত্বে করা হবে। এ সব কমিটিতে ১ জন আহ্বায়ক, ৩ জন যুগ্ম আহ্বায়ক, ১ জন সদস্য সচিব ও বাকি সবাই সদস্য হবেন। তবে ৬ মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে হবে। না পারলে নতুন আহ্বায়ক কমিটি করতে হবে।
১১.১১। প্রাথমিক পর্যায়ে এবং কখনও সাংগঠনিক শূন্যতা সৃষ্টি হলে তাৎক্ষনিক ভাবে আহ্বায়ক কমিটি করা হবে। তাদেরকে পরবর্তীতে ৬ মাসের মধ্যে চুড়ান্ত কমিটির প্রস্তাব উপরস্থ ও কেন্দ্রীয় পরিষদে পাঠাতে হবে।
১১.১২। জনসংখ্যার / থানার সংখ্যার বিবেচনায় মহানগরে একাধিক সাংগঠনিক জেলা করা যাবে। মহা-নগর কমিটি ও জেলা কমিটি সমমানের এবং মহানগরের থানা গুলো উপজেলা সমমানের হবে। ওয়ার্ড হবে ইউনিয়নের সমমানের। নগর-ওয়ার্ডের অধীনে মহল্লা/পাড়া কমিটি করা যাবে। প্রবাসী দেশীয় কমিটিগুলো জেলার ও শহরের কমিটিগুলো উপজেলার সমমানের হবে।
১২. পরিষদ, কমিশন, কেন্দ্র সমূহ ও দায়িত্ব :

১২.১। জাতীয় সম্মেলন : সংগঠনের সর্ব্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম হিসাবে এ সম্মেলন প্রতি বছর বার্ষিক সাধারণ সভায় মিলিত হবেন এবং তাদের গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত ও দিকনির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হবে। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভাপতি এ সভায় সভাপতিত্ব করবেন। কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বার্ষিক সভায় তার বাৎসরিক কার্যবিবরনি প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন। কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক তার চুড়ান্ত অডিট করা বার্ষিক হিসাব বিবরণী ও আগামী বার্ষিক বাজেট পেশ করবেন। শেষে সভাপতি ভবিষ্যতের পরিকল্পনা / প্রস্তাবনা / কর্মসূচী উত্থাপন করবেন। জাতীয় সম্মেলন বিশদ আলোচনান্তে নীতিগত দিক-নির্দেশনা ও সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করবেন।

১৩.৬। নৈতিক সমাজের আদর্শ, নীতিমালা ও গঠনতন্ত্রের লংঘন বা শৃংখলা ভংগ জনিত অভিযোগ থাকলে, এ জন্য তলবী সভা নিষ্প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সাক্ষ/প্রমাণ সহ ঘটনার লিখিত অভিযোগ পাঠাতে হবে। সংশ্লিস্ট শৃংখলা কমিটি এবং কে শৃ ক সভাপতি পরিষদকে অবহিত রেখে দ্রুত তদন্ত ও বিচারের ব্যবস্থা করবেন
১২.২। সভাপতি পরিষদ : সভাপতি, সহ-সভাপতিবৃন্দ, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকবৃন্দ সদস্য হবেন। গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী তারা নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। কে নি প থেকে তা পাশ করিয়ে নিতে হবে। এ পরিষদে উপদেষ্টাবৃন্দকে আমন্ত্রন করা যাবে।
১২.৩। উপদেষ্ঠা মন্ডলী : কর্মজীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন এবং সুনাম-সুখ্যাতি অর্জন করেছেন এমন মেধাবী, বিজ্ঞ-প্রাজ্ঞ-অভিজ্ঞ, সৎ-নীতি-আদর্শবান ও বরেণ্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে এ
১২.৪। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ (কে নি প): জাতীয় সম্মেলনের ও সভাপতি পরিষদের দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা প্রনয়ন, বাস্তবায়ন এবং নির্বাহী পরিচালনার সার্বিক দায়িত্ব নির্বাহী পরিষদ পালন করবেন। সাধারণ সম্পাদক এ পরিষদের সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন।
১২.৫। বিভাগীয় সমন্বয় পরিষদ (বি স প): কে নি প থেকে একজন সহ-সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক বি স প সভায় নেতৃত্ব দিবেন। ধারা ১১.৭ অনুযায়ী বি স প সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবেন।
১২.৬। দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন (কে নি ক): কে নি প প্রয়োজনীয় জনবলসহ, ৫ জন কমিশনার নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। কে নি প প্রয়োজনীয় সহকারী কমিশনার নিয়োজিত করতে পারবেন। তারা ডেটা-এন্টির মাধ্যমে তৃণমূল পর্যন্ত সকল সদস্যদের তথ্য ও পরিচিতি সংগ্রহ করবেন। কে নি ক একটি নির্বাচনী বিধিমালার খসড়া তৈরী করে কে নি প থেকে অনুমোদন নিয়ে বাস্তবায়ন করবেন।
১২.৭। কেন্দ্রীয় শৃংখলা কমিশন (কে শৃ ক) : কে নি প একটি তদন্ত ও বিচারিক ব্যবস্থার আদলে প্রয়োজনে এ কমিশন গঠন করবেন। এ কমিশন প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের শৃংখলা রক্ষা, অভিযোগ তদন্ত ও বিচার সংক্রান্ত বিধিমালা তৈরী করে কে নি প -এর অনুমোদন নিয়ে বাস্তবায়ন করবেন।
১২.৮। কেন্দ্রীয় তহবিল কমিশন (কে ত ক): এ কমিশন তহবিল সংগ্রহ, ব্যংক একাউন্ট পরিচালনা, দৈনন্দিন হিসাব রক্ষনাবেক্ষন, বাৎসরিক বাজেট প্রনয়ন, কর্পোরেট পদ্ধতিতে আয় / ব্যায়ের স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা ও হিসাব রক্ষন ও নিরীক্ষণের সকল দায়িত্ব পালন করবেন। ধারা ১৬ এর দিক নির্দেশনা অনুযায়ী একটি স্বচ্ছ ও জবাবদীদিতা মূলক আর্থিক ব্যবস্থাপনা নীতিমালা কে নি প-থেকে অনুমোদন করিয়ে নিয়ে বাস্তবায়ন করবেন।
১২.৯। কেন্দ্রীয় গবেষনা ও পরিকল্পনা কমিশন (কে গ প ক) : এ কমিশন প্রতিষ্ঠানের দর্শন, আদর্শ, ভিশন, মিশন এবং জাতীয় লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সমূহ অর্জনের জন্য, বাংলাদেশে নৈতিক, আর্থ-সামাজিক, শিক্ষা-স্বাস্থ্য-সংস্কৃতিক-ক্রীড়া-যুবউন্নয়ন , ধর্মীয়, রাজনৈতিক এবং রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রগতিশীল গুনগত সংষ্কার, উন্নয়ন ও রুপান্তর সাধনের প্রস্তাবনা এবং নির্বাচনী ঘোষণা পত্র তৈর্রী করবেন।
১২.১০। নৈতিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (নৈ প্র কে) : এ কেন্দ্র চরিত্র গঠন, নৈতিক জাগরণ ও নেতৃত্বের প্রশিক্ষণসহ নৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক প্রশিক্ষণ দিবেন। বিভাগীয় শহরে শাখা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে ও প্রয়োজনে ভ্রাম্যমান ট্রেনিং সেল নিয়মিতভাবে তৃণমূলে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালাবেন। তারা প্রশিক্ষন সিলেবাস কে নি প থেকে অনুমোদন করিয়ে নিবেন। আদর্শ ও সুস্থ “রাজনৈতিক মনস্তত্ব” গড়ে তোলা এ কেন্দ্রের একটি বড় দায়িত্ব হবে।
১২.১১। চতুর্থ-বার্ষিক সম্মেলন : অন্তত প্রতি ৪ বৎসর পর পর কে নি প -এর সিদ্ধান্ত ও সার্বিক পরিকল্পনা অনুযায়ী এ সম্মেলন করা হবে। প্রয়োজনে আগেও করা যাবে। এ সম্মেলনে তৃণমূল থেকে সদস্যবৃন্দের ব্যাপক অংশগ্রহনের ব্যবস্থা থাকবে। বিভিন্ন স্তর থেকে কতজন কাউন্সিলর ও ডেলিগেট আসবেন ও সার্বিক নির্দেশনা ও পরিকল্পনা ৬ মাস আগে থেকে শুরু করতে হবে। এ সম্মেলনে পরবর্তী টার্মের নেতৃত্ব নির্ধারণ, মেয়াদী ও কৌশলগত পরিকল্পনা, পর্যালোচনা ও পাশ করা হবে।
১৩। তলবী সভা :
১৩.১। যে কোন পরিষদ বা কমিটি নিজ স্তরে মোট সদস্য সংখ্যার ন্যুনতম এক তৃতীয়াংশ সদস্য নিজস্ব স্বাড়্গরে রিকুইজিশন / তলবী সভার জন্য অনুরোধ করতে পারবেন। এ সভার পদ্ধতি নিম্নরুপ হবে :
১৩.২। তলবী সভার কারণ, যুক্তি ও এজেন্ডা / প্রস্তাবনা বিস্তারিত ভাবে লিখে নিজ ও উপরস্থ স্তরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দিতে হবে। তলবী সভা প্রস্তাবের সাথে এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের নাম, সদস্য নং, NID নং,মহত্বের স্বাড়্গর এবং মোবাইল নং থাকতে হবে। প্রয়োজনে স্বাড়্গরকরীদের সনাক্তকরণ কার্য্যক্রম গ্রহণ করা যাবে।
১৩.৩। প্রথমে আপোষ মিমাংসার চেষ্টা হবে, ব্যার্থ হলে তলবী সভার অনুরোধ পত্র প্রাপ্তির ২১ কার্য্য দিবসের মধ্যে সভাপতি পরিষদ কে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট স্তরে সভাপতি/ সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক / উক্ত বিষয়ে সভা ডাকতে হবে। সভার কোরাম হবে তলবকারীদের ২/৩য়াংশ।
১৩.৪। ২১ কার্য্যদিবসের মধ্যে সভা ডাকা না হলে, বা সমস্যার সমাধান না হলে তলবীকারীগন নিজেরাই সংশ্লিষ্ট সকলকে এবং সভাপতি পরিষদকে অবগত রেখে পরবর্তি ২১ কার্য্যদিবসের মধ্যে তলবী সভা ডাকতে পারবেন, তবে সংশ্লিষ্ট পরিষদ/কমিটির সকল কর্মকর্তা/সদস্যকেই আমন্ত্রন জানাতে হবে। এ তলবী সভার বিস্তারিত বিবরণ এবং প্রস্তাব বিবেচনা ও সিদ্ধান্তের জন্য সভাপতি পরিষদে পাঠাতে হবে।
১৩.৫। তলবী সভার কোরাম পূর্ন না হলে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করা হবে। তখনও কোরাম পূর্ন না হলে সভা ও এজেন্ডা বাতিল হয়ে যাবে।
১৪। নির্বাচন, কমিটি গঠন ও নেতৃত্ব নির্ধারন:
১৪.১। প্রাথমিক পর্যায়ে বা কোন কমিটি ভেংগে গেলে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির / কে নি প -এর অনুমোদিত খসড়া নীতি-আদর্শ ও গঠনতন্ত্র “অনুমোদিত খসড়া” হিসাবে গণ্য হবে এবং এ খসড়া অনুযায়ী মহানগর/জেলা/ উপজেলা/ পৌরসভা / থানা/ইউনিয়ন/ওয়ার্ড পর্যায়ে আহ্বায়ক কমিটি সমূহ গঠন করতে হবে। আহ্বায়ক কমিটি সমূহ তৃণমূল থেকে যত দ্রুত সম্ভব পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রুপান্তরিত করতে হবে। বিশেষ কারণে বিলম্বিত না হলে এক বছরের মধ্যেই জাতীয় সম্মেলনের সভায় খসড়া গঠনতন্ত্র চুড়ান্ত করতে হবে।
১৪.২। ২০২১ সাল হবে প্রথম সাংগঠনিক বছর। জেলা/মহানগর থেকে তৃণমূলের সকল স্তরে পর্যায়ক্রমে সংগঠন গড়ে তোলা হবে। সকল সদস্যবৃন্দ প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধিত ‘‘প্রাইমারী’’ সদস্য ও ভোটার হিসাবে “দলীয় নির্বাচক মন্ডলী” হবেন এবং কমিটি গঠনে ও নেতৃত্ব নির্ধারণে প্রত্যেকেই যেন ভোট দিতে পারেন – পর্যায়ক্রমে এমন ব্যবস্থা কে নি ক করবেন। ১৪.৩। ছাত্র, ছাত্রী, তরুণ-যুবক, মহিলা, পেশাজীবি, কৃষক, শ্রমিক, প্রবাসী এবং ক্ষুদ্র নৃগোাষ্ঠি/জাতিগোষ্ঠিদের মধ্যেও সদস্য সংগ্রহ ও সংগঠন গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে।
১৪.৪। নির্বাচনে কোন প্যানেল করা যাবে না। কে নি ক অনুমোদিত প্রত্যেক যোগ্য প্রার্থী নিজ গুনে ব্যক্তি হিসাবে নির্বাচন করবেন।
১৪.৫। কে নি ক যত দ্রুত সম্ভব একটি নির্বাচন বিধিমালা প্রস্তুত করে কে নি প সভায় উপস্থাপন করবেন। চুড়ান্ত অনুমোদনের পর তা অনুসরণ করা হবে।
১৪.৬। সততা, মেধা, বিচক্ষণতা, যোগ্যতা ও নেতৃত্বের গুনাবলী বাস্তব জীবন-চর্চা ও প্রশিক্ষনের মাধ্যমে অর্জন করতে হবে।
১৪.৭। ঢাকায় কেন্দ্রীয় অফিস হবে। জেলা ও তৃণমূল স্তরেও অফিস স্থাপন করতে হবে, সক্রিয়ভাবে নিয়মিত অফিস চালাতে হবে এবং সভার সকল কার্যক্রম নথিভুক্ত রাখতে হবে। অফিসে নেতা-কর্মীবৃন্দের জন্য, সম্ভব হলে প্রতি সপ্তাহের ১টি দিন সচেতনতামূলক এজেন্ডা ভিত্তিক মুক্ত-আলোচনার কর্মসূচী পালনের চেষ্টা করতে হবে।
১৫। কর্মকর্তাবৃন্দের দায়িত্ব-কর্তব্য:

১৫.১। সভাপতি পরিষদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ এবং সকল স্থানীয় কমিটি : সকল কমিটির / পরিষদের মেয়াদ হবে ৪ বছর। নেতৃত্ব প্রদানে সকল পদাধিকারিকে অবশ্যই সততা-নীতি-আদর্শ-নৈতিকতা এবং প্রজ্ঞা ও বিচক্ষনতার ব্যক্তি-দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহনে টাই হলে প্রত্যেক স্তরের সভাপতির ১ টি অতিরিক্ত কাস্টিং ভোট থাকবে।
১৫.২। সভাপতি/ সহ সভাপতিবৃন্দ : সভাপতি সার্বিক ভাবে প্রতিষ্ঠান ও শাখা প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁহারা নিজস্ব পর্যায়ে সাংগঠনিক নীতি নির্ধারনী বিষয়ে গণতান্ত্রিক ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন এবং সংগঠন পরিচালনায় বলিষ্ট ভুমিকা রাখবেন। তাঁদেরকে সততা, নীতি-আদর্শ ও নৈতিক আচরণের রোল মডেল হতে হবে।
১৫.৩। সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ : প্রতিষ্ঠানের নিজ নিজ স্তরে প্রধান কার্যনির্বাহী ও সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন। সভাপতির সাথে পরামর্শসমন্বয় করে এবং তার নির্দেশে প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। তিনি সভাপতিকে সকল সময়/বিষয় অবগত রাখবেন। ব্যক্তি হিসাবে তাঁদেরকেও সততা, নীতি-আদর্শ ও নৈতিকতার রোল মডেল হতে হবে। তারা জাতীয় সম্মেলন ও কার্যনির্বাহী কমিটির গৃহীত নীতি, সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচীর সফল বাস্তবায়ন, সংগঠনের সার্বিক ব্যবস্থাপনা এবং মনিটারীং এর জন্য দায়ী থাকবেন।
১৫.৪। সম্পাদকবৃন্দ : সভাপতি পরিষদ ও নির্বাহী পরিষদের দিক নির্দেশনা/সিদ্ধান্ত সমূহ কার্যকর ভাবে বাস্তবায়ন করা তাদের প্রধান দায়িত্ব। নিজ নিজ বিষয়ে তাঁদের নিজ উদ্যোগে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তাঁদেরকেও নৈতিক আচরনের রোল মডেল হতে হবে।
১৫.৫। নির্বাহী সদস্য : যে কোন প্রদত্ত দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করা তাদের দায়িত্ব। সকলের মত সংগঠনের সদস্য সংগ্রহে এবং জনগণের মধ্যে নৈতিক সমাজের ভাবমূর্তি ও জনপ্রিয়তা বাড়ানোর লক্ষ্যে কার্যকর ভূমিকা রাখবেন। সে জন্য তাদের নিজস্ব নৈতিক ভাবমূর্তি উন্নত করতে হবে, সমাজে রোল মডেল হতে হবে।
১৫.৬। অন্যান্য দায়িত্ব/কর্তব্য : সকল স্তরে প্রযোজ্য কিছু দায়িত্ব নিম্নরুপ ঃ
১৫.৬.১। সাধারণ সদস্য ও নৈতিক-নেতা/কর্মীবৃন্দ সকল কর্মকান্ডে নৈতিক সমাজের নীতি-আদর্শ-নৈতিকতা এবং ভিশন/মিশন/লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যক্তি-দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সুস্থ / পরিচ্ছন্ন পরিবেশ সৃষ্টিতে অবদান রাখবেন।
১৫.৬.২। তহবিল সংগ্রহ, ব্যবস্থাপনা, আয় ও ব্যায় এবং হিসাব রক্ষনাবেক্ষণ ও নিরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নিয়ম-নীতি মনে প্রানে ধারন/পালন করবেন। বিষয়টি কোন “বিশ্বাস-অবিশ্বাস” – এর প্রশ্ন নয়, প্রশ্ন হল অর্থ-ব্যাবস্থাপনায় সততার-স্বচ্ছতার-জবাবদিহীতার প্রশ্নাতীত ঐতিহ্য সৃষ্টি করা।
১৫.৬.৩। নৈতিক সমাজের উজ্জ্বল প্রাতিষ্ঠানিক ভাবমূর্তী সৃষ্টির জন্য সদস্যবৃন্দ সকল প্রকার অসদাচরণ, অন্যায় ও অনৈতিক আচরণ/ ব্যবহার, দূর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন থেকে বিরত থাকবেন।
১৫.৬.৪। ব্যাক্তিগতভাবে নৈতিক সমাজের চেতনা, ভাবাদর্শ , নীতিমালা , ভিশন , মিশন, অঙ্গীকার, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিজেরা স্বচ্ছ ও স্পষ্ট ধারণা রাখবেন এবং নতুন সদস্য ও সমর্থকদের মধ্যে এ সংক্রান্ত শক্তিশালী চেতনা সৃষ্টির জন্য নিবেদিত থাকবেন। নিজ আগ্রহে চরিত্র গঠন ও নেতৃত্বের প্রশিক্ষনে অংশ নিবেন।
১৫.৬.৫। সংগঠনে কোন রকম দলাদলি, গ্রুপিং, দ্বন্দ-কোন্দল, আধিপত্য বিস্তারের ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য অত্যন্ত সজাগ থাকবেন। জেন্ডার সমতা এবং নারী ও শিশু অধিকার ও মর্য্যাদা রক্ষায় সকলকে সচেতন ভূমিকা রাখতে হবে
১৫.৬.৬। প্রত্যেকে যে কোন ভিন্নমতের প্রতি পরম সহিষ্ণুতা ও সম্মান দেখাবেন এবং গনতান্ত্রিক আচরণ, শালীনতা ও সহনশীলতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবেন। মুক্ত চিন্তা, বাক স্বাধীনতা, মত-প্রকাশের স্বাধীনতা, সৃজনশীলতা, দায়িত্বশীলতা ইত্যাদি এবং মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন।
১৫.৬.৭। সকল প্রকার ধর্মান্ধতা, উগ্র-মতবাদ, সহিংসতা এবং সাম্প্রদায়িকতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখবেন এবং সর্তক থাকবেন। লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, দূর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন ইত্যাদি দোষ-ত্রুটি-অপরাধ মুক্ত চরিত্র গড়ে তুলবেন।
১৫.৬.৮। প্রত্যেক সদস্য দেশের প্রচলিত সংবিধান, আইন ও বিধি-বিধান পালন করবেন এবং সকল ক্ষেত্রে ও স্তরে আইনের শাসনের পরিবেশ প্রতিষ্ঠায় বিশিষ্ট ভূমিকা রাখবেন; নিজ নিজ কর্মের মাধ্যমে জনগনের মধ্যে নৈতিক সমাজের উপর পূর্ন আস্থা / বিশ্বাস সৃষ্টি করতে অবদান রাখবেন।
১৬। তহবিল গঠন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা: কেন্দ্রীয় তহবিল কমিশন (কে ত ক) বিস্তারিত ভাবে তহবিল সংগ্রহ, বাজেট প্রনয়ন, জমা-খরচ ব্যবস্থাপনা ও নীরিক্ষার জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করবেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভায় তা চুড়ান্ত ভাবে অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। এ খসড়া প্রনয়নের দিক নির্দেশনা নিম্নরুপ :
১৬.১। বৈধ ভাবে তহবিল সংগ্রহ করে বাৎসরিক বাজেট করতে হবে। আয় ও ব্যায়ের পরিকল্পনা প্রনয়ন ও বাস্তবায়নে পূর্ন স্বচ্ছতা ও জবাবদীহিতা নিশ্চিত করার পদ্ধতি থাকতে হবে।
১৬.২। কেন্দ্রীয়/স্থানীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যে কোন তফশিলী ব্যাংকে নৈতিক সমাজের হিসাব খোলা যাবে এবং বিশেষ কারন ও ব্যতিক্রম ছাড়া, সকল লেনদেন ব্যাংক হিসাবের জমা-স্লিপ-মানি রশীদ ও চেকের মাধ্যমে করতে হবে। মাসিক ব্যাংক হিসাব বিবরনী অনুযায়ী ক্যাশ বইয়ে ও লেজারে আয়/ব্যায়ের সাপ্তাহিক/মাসিক হিসাব সমন্নয় করতে হবে। ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করা হবে সভাপতিসহ ৩ জনের মধ্যে যে কোন ২ জনের স্বাক্ষরে। চাহিদা ও অনুমোদন বইয়ে লিখিত অনুমোদন সাপেক্ষে চেক স্বাক্ষর /প্রদান করা যাবে। যারা চেক সই করবেন তারা নিজেরা কোন খরচ করতে পারবেন না। একই পদ্ধতি জেলা / নগর এবং উপজেলা / থানা / পৌর শাখায় প্রযোজ্য হবে।
১৬.৩। অল্প কিছু টাকা পেটি ক্যাশ হিসাবে হাতে থাকতে পারে। এর জন্যও পৃথক হিসাব বই / পেটি ক্যাশ বই থাকবে। পৃথক একজনকে কোষাধক্ষ নিয়োগ করে তাঁর দায়িত্বে পেটি ক্যাশের হিসাব ও নিরাপত্তা বিধান করতে হবে, কিন্তু তিনি নিজে কোন খরচ করতে পারবেন না। চাহিদা ও অনুমোদন বইয়ের মাধ্যমে খরচ ও হিসাব কোষাধক্ষ তার পেটি ক্যাশ বইতে লিখবেন। সময়ে সময়ে এবং অবশ্যই প্রতি মাসে মূল ক্যাশ বইয়ের হিসাবের সাথে তা সমন্বয় করতে হবে।
১৬.৪। যে কোন অনুদান সাধারণত একাউন্ট-পেয়ী চেকের বা অন-লাইন ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে গ্রহন করতে হবে, অথবা নৈতিক সমাজের ব্যাংক হিসাবে সরাসরি জমা দিয়ে জমা-স্লিপ অনুযায়ী ক্যাশ বইয়ে লিখতে হবে। বিশেষ অনুমোদন ছাড়া কোন ক্যাশ-অনুদান গ্রহন করা যাবে না। জবাবদীহিতার ও স্বচ্ছতার জন্য ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে সকল লেন দেন করা ভাল। প্রাপ্ত ক্যাশ থেকে সরাসরি ক্যাশ খরচ করা যাবে না। বিশেষ প্রয়োজনে শাখার সভাপতি পরিষদের অনুমোদন নিয়ে ব্যতিক্রম করতে পারেন।
১৬.৫। দিনের জমা ও খরচ দিনেই ক্যাশ বইতে ও ক্যাশ লেজারে লিখতে হবে এবং হিসাব রক্ষনাবেক্ষনের নিয়ম অনুযায়ী ও জমা খরচের নিরীক্ষনের জন্য ভাউচার সংরক্ষন করতে হবে। দিনের হিসাব দিনের শেষে মিলাতে হবে এবং মাস শেষে ব্যাংক ষ্টেটমেন্টের স্থিতির সাথে ক্যাশ বইয়ের স্থিতি সমন্বয় করতে হবে।
১৬.৬। ত্রৈ-মাসিক অর্থাৎ ৩ মাস পর পর আভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা করতে হবে। বার্ষিক চুড়ান্ত নিরীক্ষা, জাতীয় / আন্তর্জাতিক মানের অডিট ফার্মের মাধ্যমে করা হবে। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় নৈতিকতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদীহিতার বিশেষ সংস্কৃতি / ঐতিহ্য সচেতন ভাবে গড়ে তুলতে হবে।
১৬.৭। সন্দেহজনক সূত্র থেকে কোন অবৈধ বা কালো টাকা অনুদান হিসাবে নেয়া যাবেনা। অবৈধ ভাবে এবং অবৈধ কাজে কোন টাকা খরচও করা যাবে না।
১৬.৮। সুনিদিষ্ট কর্মী কল্যান, সমাজ কল্যান, বেকারত্ব-দারিদ্র বিমোচন, দরিদ্রদের শিক্ষা ও চিকিৎসা সহায়তা এবং দূর্যোগে ত্রান বিতরণের জন্য একটি পৃথক কল্যান তহবিল গঠন করতে হবে। বাজেটে উদ্বৃত্ত তহবিল থাকলে তা প্রতিষ্ঠানিক স্বার্থে মেধা ও শিক্ষা উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিনিয়োগ করতে পারবেন। সভাপতি বিভিন্ন প্রকল্প মূল্যায়নের ব্যবস্থা করবেন।
১৬.৯। হিসাব বিজ্ঞানের রীতি-নীতি-শিক্ষা অনুযায়ী অন্যান্য সব পদ্ধতি কার্যকর ভাবে অনুসরন করতে হবে। সময় ও সুযোগ মত ডিজিটাল পদ্ধতি / সফট ওয়ার হিসাব পদ্ধতি প্রবর্তন করা হবে।
১৬.১০। সব স্তরে হিসাব উপ-কমিটি করা হবে। তারা প্রতি মাসে হিসাব পর্যালোচনা, মতামত ও সুপারিশ করবেন যা কার্যকর করতে হবে।
১৭। অন্যান্য নিয়মাবলী :
১৭.১। কোন সিদ্ধান্ত/রুলিং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ কর্তৃক গৃহীত হলে পরবর্তীতে বাৎসরিক সভায়/সম্মেলনে তা উত্থাপন করে অনুমোদন গ্রহণ বা গঠনতন্ত্রে সংযোজন/সংশোধন করা যেতে পারে। কোন কারণে সে সিদ্ধান্ত / রুলীং গৃহীত না হলেও এ সংক্রান্ত অতীত কার্যক্রম অবৈধ হবে না ।
১৭.২। তলবি সভা ছাড়া অন্য সব সভার কোরাম হবে ৫০% + ১ জন। সময় মত কোরাম না হলে, ৩০ মিনিটের জন্য সভা মুলতবী করা হবে। তারপর সভার কার্যক্রমের জন্য কোরামের প্রয়োজন হবে না।
১৭.৩। সদস্য পদে আগ্রহী ব্যাক্তি অনুমোদিত হলে তার সদস্য ফি ও সদস্য পরিচয়পত্র খরচ নৈতিক সমাজের ব্যাংক-হিসাবে জমা করতে হবে এবং ব্যাংক স্লীপ জমা দিলে তাকে সদস্য কার্ড প্রদান করা হবে। বাৎসরিক সদস্য ফি সময়ে সময়ে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত হবে। যে কোন সদস্য তার সাধ্যমত প্রতিষ্ঠানকে অনুদানও দিতে পারবেন। বার্ষিক ফি বকেয়া / অনাদায়ী থাকলে তার ভোটাধিকার, সকল বকেয়া পরিশোধ না করা পর্যন্ত, স্থগিত থাকবে।
১৭.৪। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ডেটা-এন্ট্রি করে সংগঠনের আই টি বিভাগের মাধ্যমে সকল সদস্যদের নাম ঠিকানা, পেশা, শিক্ষা, জেলা / উপজেলা/ নগর/ থানার ভিত্তিতে নিবদ্ধিত করবেন সংশ্লিষ্ট শাখা ও নির্বাচন কমিশন। শাখা সংগঠনের সহায়তায় প্রতি বৎসর/বা সময়ে সময়ে কে নি ক -এর নির্দেশে এ তথ্য হাল নাগাদ করতে হবে। এ পদ্ধতি প্রবর্তনের / বাস্তবায়নের জন্য প্রথম দিকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা মূলক প্রকল্প হাতে নিতে হবে এবং দ্রুত বাস্তবায়িত করতে হবে।
১৭.৫। নতুন প্রতিষ্ঠান হিসাবে প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক / সভাপতি পরিষদ কতৃক অনুমোদিত এ খসড়া গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে সকল সংগঠনিক কাজ চালানো হবে এবং বিভিন্ন কমিটি সমূহ গঠন করতে হবে। পরবর্তীতে গঠনতন্ত্র চুড়ান্ত হলে সে অনুযায়ী সংগঠন পরিচালিত হবে। ছাত্র, ছাত্রী, যুব, মহিলা, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবি, কৃষক, শ্রমিক, ক্ষুদ্র-নৃগোষ্টি/জাতিগোষ্ঠি এবং প্রবাসী ইত্যাদি ক্ষেত্রেও সহযোগী সংগঠন সমূহ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে।
১৭.৬। প্রতি স্তরের সংগঠন যথাযথ চ্যানেলে উপরস্থ দুই স্তরকে জানিয়ে নিম্নতম ৩১ কার্য দিবসের নোটিশ দিয়ে বার্ষিক সভা ডাকবেন। এ সভায় জাতীয় এবং স্থানীয় পরিস্থতির মূল্যায়ন, প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট স্তরে সাংগঠনিক অবস্থা ও কর্মসূচির পরিকল্পনা, বিবরণ, ভিশন, মিশন, লক্ষ-উদ্দেশ্য ইত্যাদি অর্জন-পর্যালোচনা এবং হিসাব বিবরনি ও নীরিক্ষা প্রতিবেদন সহ ভবিষ্যত কর্ম পরিকল্পনা, দিক নির্দেশনা আলোচিত হবে ও সিদ্ধান্ত ও পরামর্শ কে নি প -কে জানাতে হবে। এ সব প্রস্তাবনা প্রতিবেদন / সভার লিখিত কার্যবিবরনি যথাযথ স্তরের মাধ্যমে সর্বোচ্চ পর্যায়ে সভার ৩ সপ্তাহের মধ্যে পৌছাতে হবে।
১৭.৭। প্রতি স্তরের সংগঠন প্রতি মাসে আলোচ্য সূচী দিয়ে অন্ততঃ একটি সমন্বয় সভা এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক একাধিক কর্মসূচী অবশ্যই পালন করবেন এবং সভার র্কাযবিবরনীর ও কর্মসূচী পালনের প্রতিবেদনের এক কপি উপরের স্তরে ১ সপ্তাহের মধ্যে পাঠাবেন। সকল মাসিক বা যে কোন সভায় উপরস্থ যে কোন স্তরের সদস্য / কর্মকর্তা উপস্থিত থাকতে / অংশ নিতে পারবেন, তবে সিদ্ধান্ত গ্রহনে তাদের ভোটাধিকার থাকবে না।
১৭.৮। সংবিধানের কোন ধারা সংশোধনের / পরিবর্তনের বিষয় অনুভুূত হলে সে বিষয়ে পূর্ন-বিবরন ও যুক্তি উপরের স্তরের মাধ্যমে কে নি প -কে জানাতে হবে। বিষয়-ভিত্তিক সাব-কমিটি প্রস্তাবটি বিশ্লেষণ/সুপারিশ সহ উপরস্থ নির্বাহী পরিষদে পাঠাবেন। কে নি প এ বিষয়ে চুড়ান্ত ব্যবস্থা / সিদ্ধান্ত নিবেন।
১৭.৯। জেলা/মহানগর/উপজেলা/থানা পর্যায়ে সকল জাতীয় দিবস জনগনকে সাথে নিয়ে উদ্যাপন করতে হবে।
১৮। বিবিধ বিষয়/নিয়ম:
১৮.১। এই খসড়া আদর্শ, নীতিমালা ও গঠনতন্ত্র ব্যতিক্রম ধর্মী, দূর-দর্শী ও ভবিষ্যত-দর্শী। আগ্রহী ব্যক্তিবর্গকে এবং সদস্যবৃন্দকে তাই মনোযোগ সহকারে পড়তে ও বুঝে উঠতে উৎসাহিত করতে হবে, যাতে নৈতিক সমাজের বৈশিষ্ট ও আদর্শ সম্পর্কে সবার স্পষ্ট ধারণা জন্মে এবং তাঁরা সদস্য হতে আগ্রহী হন। নৈতিক সমাজকে এ ভাবে একটি সাবলীল ও গতিশীল পূর্ণ গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য মন্ডিত এবং নৈতিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার সক্রিয় উদ্যেগ চালিয়ে যেতে হবে। জাতীয় ভাবমূর্তী গড়ে তোলার জন্য জনগণের মধ্যেও এ সব নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে।
১৮.২। খসড়া গঠনতন্ত্র যতদিন প্রচলিত থাকবে, বিভিন্ন কমিটি/শাখায় খালি পদ থাকবে, ততদিন সুযোগ্য, সৎ ও নীতিবান ব্যক্তিবর্গকে সকল শর্তাবলী পুরন সাপেক্ষে, সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করে নেয়া যাবে এবং উপরস্থ কমিটিকে তা জানাতে হবে।
১৮.৩। নৈতিক-সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক রূপান্তরের মানসিকতা-আন্দোলন সফল ভাবে গড়ে তুলতে হলে সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে অবশ্যই নিজ নিজ পাড়ায়/মহল্লায়/এলাকায় সততা, নীতি-আদর্শ এবং নৈতিকতার রোল মডেল হতে হবে। ঘরোয়া বৈঠক, খুলী বৈঠক, শিক্ষামূলক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সভা, সেমিনার, সমাবেশ করে গনচেতনা ও অসুস্থ মানসিকতা পরিবর্তনের জন্য জনসমর্থন সৃষ্টি ও শানিত করতে হবে। এভাবেই সর্বসাধারণের মধ্যে ধারণাগত পরিবর্তন ও নৈতিক জাগরণ সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালাতে হবে। নৈতিক জাগরণের কঠিন কাজ সফল করতে ”নৈতিক জাগরণ সভা” নামে সকল স্তরে ও প্রাথমিকসহ সকল বিদ্যালয়ে / কলেজে প্রতিষ্ঠান প্রধানের সহযোগীতায় নিয়মিত আলোচনা সভা করতে হবে। এ সভায় যে কোন গন্য-মান্য, শ্রদ্ধাভাজন ও জ্ঞানী-গুনী ব্যাক্তিত্বকে প্রধান / অন্যতম বক্তা করা যাবে।

১৮.৪। কেন্দ্র পরিচালিত নিজস্ব ওয়েব সাইটে, “নৈতিক সমাজ ” নামে সাপ্তাহিক ব্লগ /পত্রিকা / জার্নালে এবং অন লাইন সোশাল মিডিয়াতে নৈতিক সমাজ সংক্রান্ত সকল তথ্য খবর, কর্মসূচী, ইত্যাদি নিয়মিত ও কার্য্যকর ভাবে প্রচার প্রকাশ করতে হবে। এ জন্য আই সি টি বিষয়ে সুপ্রশিক্ষিত, সুদক্ষ ও অভিজ্ঞদের দিয়ে একটি মিডিয়া সেল গঠন করতে হবে। শীর্ষ থেকে তৃণমূল পর্যন্ত-সকল স্তরের কর্মসূচি ও কার্যক্রমের প্রতিবেদন/সংবাদ/ছবি ভিডিও যথা সময়ে কেন্দ্রের মিডিয়া সেলে পাঠাতে হবে এবং তা “নৈতিক সমাজ” প্রকাশনায় ছাপানো হবে। সতর্ক থাকতে হবে যেন কোন সামাজিক/ধর্মীয় বা রাষ্ট্রীয় নিয়ম-নীতি-আইন ও সংবেদনশীলতা লংঘন না হয়।
১৮.৫। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সহনশীলতা, পরমত সহিষ্ণুতা, উন্নত রাজনৈতিক সংষ্কৃতি এবং গুরুতর, আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক ও ভূ-রাজনৈতিক এবং জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে পলিসি সহযোগিতা ও সমন্বয়ের উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। সিভিল সমাজ, বুদ্ধিজীবি মহল ও অন্যান্য দলের নেতৃ-বৃন্দকে এ সব আলোচনা ও সেমিনারে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
১৮.৬। কে নি প -এর একটি দায়িত্ব হবে সংসদীয় কমিটি এবং সংসদ সদস্যদের বলিষ্ঠ ভূমিকার পরিবেশ তৈরীতে অবদান/আবেদন রাখা। দেশে আইন অনেক আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। তাই রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে, বিশেষ করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে আইন প্রয়োগে, আইনের শাসন নিশ্চিত করতে এবং জাতীয় সংসদকে এসব বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য উৎসাহিত করতে হবে।
১৮.৭। জাতীয় সংসদে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে পার্লামেন্টারী কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি ও কে নি প বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় ও পলিসি সমন্বয় করবেন।

উপসংহার

১৯। “নৈতিক, মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধ রাজনীতির” বিশেষ বৈশিষ্ট্যমন্ডিত হতেই হবে “নৈতিক সমাজকে”। সকল কথায় ও কাজে মিল থাকতে হবে। হতে হবে আদর্শ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের খাঁটি রোল মডেল। পরিচ্ছন্ন, সৎ ও নীতি-নৈতিক রাজনীতি, নৈতিক জাগরণ এবং ন্যায্য সমাজ গড়ে তোলার, সকলের জন্য সমতা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। এ জন্য প্রয়োজন দৃঢ় প্রত্যয়, আত্ম-বিশ্বাস, সততা ও নৈতিক মানসিকতা এবং মহৎ জীবন দর্শনে উজ্জীবিত রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও সংগঠন। বাধা বিপত্তি আসলেও ধৈর্য্য ধরে সাহস করে রোড ম্যাপ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। নৈতিকতা ও সততার জয় অবশ্যই হবে। শুধু ক্ষমতাসীন হয়ে নয়, বিরোধী ভূমিকাতেও এসব দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হতে হবে। সফলতার মূলমন্ত্র – সঠিক কাজের মাধ্যমে সাধারণ জনগনের মধ্যে গভীর আস্থা ও বিশ্বাস সৃষ্টি।
২০। দেশে সৎ, মেধাবী, বিচক্ষণ এবং প্রচুর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অনেক প্রবীন ব্যক্তিত্ব আছেন। আশা করা যায় তাঁরা এগিয়ে আসবেন, তরুনদের সাথে প্রজন্মগত দূরত্ব দূর করবেন, তরুন / নবীনদের জন্য সঠিক পথ রচনায় সহায়তা করবেন এবং নৈতিক সমাজ বির্নিমানে ভূমিকা রাখবেন; এ ভাবেই তাদের প্রভুত জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দেশের কাজে লাগাবেন, নৈতিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধ রাজনীতি, গণবান্ধব প্রশাসন, ন্যায় বিচার ও সকলের উন্নয়ন নিশ্চত করতে তারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবেন।
২১। সাম্প্রতিক কালে রুঢ় এবং কঠিন অবস্থা থেকে বিশ্বের অনেক সমাজ ও দেশ সম্পূর্ণ ভাবে বেড়িয়ে এসেছে। যেমন নরডিক দেশগুলো দুর্ধর্ষ দেশ ছিলো। পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো আমাদের মতই নৈতিক সমস্যা, অপঃরাজনীতি, দূর্নীতি, অপরাধ, মাদক ও দারিদ্রের ফাঁদে আটকা পড়েছিল। জাপান ও ভিয়েতনাম ছিল যুদ্ধ বিধ্বস্ত, দীর্ঘদিন দক্ষিন কোরিয়া ছিল সামরিক শাসনের অধীন এবং সিংগাপুর ছিল নীরব নিথর দরিদ্র মৎসপল্লী। কয়েক দশকেই তারা সবাই ঘুরে দাড়িয়েছে। দৃঢ় মনোবল এবং সৎ-সাহস নিয়ে উদ্যমী হলে এবং সৎ, মেধাবী ও বিচক্ষণ নেতৃত্ব তৈরী করতে পারলে বাংলাদেশেও এমন বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা খুবই সম্ভব, বাংলাদেশকে একটি বিশ্ব মর্যাদা সম্পন্ন আধুনিক জাতি রাষ্ট্রে পরিণত করা সম্ভব। তরুণ/নবীন/যুব সমাজের জন্য অপার সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে, জনগনের উন্নত জীবন-মান নিশ্চিত করতে এবং সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার মৌলিক রুপান্তর ঘটাতে নৈতিক সমাজকে গড়ে তুলতে হবে বিশ্ব-মানের একটি আদর্শ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে, নিশ্চিত করতে হবে নৈতিক সমাজ বিপ্লব; প্রতিষ্ঠিত করতে হবে একটি নৈতিক ও মর্যাদাশীল উন্নত রাষ্ট্র। দুই প্রজন্মের মধ্যেই তৃতীয় থেকে প্রথম বিশ্বের উন্নত জীবন মানে নিয়ে যাবার মহান স্বপ্ন পূরণ করতে অংঙ্গীকারবদ্ধ থাকতে হবে নৈতিক সমাজের সকল নেতা-কর্মীবৃন্দকে।

সমাপ্ত